যুক্তরাষ্ট্রে ফসল-বিধ্বংসী জীবাণু পাচারে অভিযুক্ত ২ চীনা নাগরিক

যুক্তরাষ্ট্রে ফসল-বিধ্বংসী জীবাণু পাচারে অভিযুক্ত ২ চীনা নাগরিক

আন্তজার্তিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টে করা একটি মামলায় দুই চীনা গবেষকের বিরুদ্ধে জৈব রোগজীবাণু পাচার, মিথ্যা তথ্য প্রদান ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী ইউনচিং জিয়ান ও ৩৪ বছরের ঝুনিয়ং লিউ। অভিযোগে বলা হয়েছে, তাঁরা চীন থেকে ‘ফুসারিয়াম গ্র্যামিনিয়ারাম’ নামের একধরনের বিপজ্জনক ছত্রাক যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান এবং দাবি করেন, তাঁরা মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ল্যাবে ওই জীবাণু নিয়ে গবেষণা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ছত্রাক কৃষিকাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ছাত্রাকটিকে একটি সম্ভাব্য ‘কৃষি-সন্ত্রাসী অস্ত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ছত্রাক গম, ভুট্টা, ধান ও যবের মতো শস্যে রোগ সৃষ্টি করে এবং বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি ঘটায়। এতে উৎপন্ন টক্সিন মানুষ ও পশুর শরীরে বমি, লিভারের ক্ষতি ও প্রজননজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।

মামলার অ্যাফিডেভিটে জানানো হয়েছে, ঝুনিয়ং লিউ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ট্যুরিস্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে ছত্রাকের একাধিক নমুনা প্রবেশ করান। তাঁর কোনো অনুমতি বা গবেষণা লাইসেন্স ছিল না। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, তিনি এই ছত্রাক লুকিয়ে এনেছেন এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে জিয়ানের ল্যাবে বিভিন্ন স্ট্রেইন ক্লোন করার পরিকল্পনা ছিল।

জিয়ান লিউয়ের প্রেমিকা। তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আণবিক উদ্ভিদ-জীবাণু মিথস্ক্রিয়া পরীক্ষাগার’-এর একজন পোস্ট ডক্টরাল গবেষক। ২০২২ সাল থেকে তিনি টেক্সাসের এক বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মরত ছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, এই গবেষণার জন্য চীন সরকার তাঁকে অর্থায়ন করেছিল এবং তাঁর ফোন থেকে পাওয়া এক ফরমে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকারের তথ্যও পাওয়া গেছে।

মামলার প্রেক্ষাপটে এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল এক্স মাধ্যমে লিখেছেন, এই ঘটনা আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ও খাদ্য সরবরাহব্যবস্থায় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অনুপ্রবেশের ষড়যন্ত্রের একটি সতর্কবার্তা।

এই অভিযোগ এমন সময়ে এসেছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন চীনা ছাত্র ও গবেষকদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করছে—বিশেষ করে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যাঁদের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি হার্ভার্ড পর্যন্ত সরকারের তদন্তের আওতায় এসেছে।

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বা ক্ষতিকর কোনো কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানায় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তারা চীনা সরকারের কোনো অর্থ পায়নি।

জিয়ান বর্তমানে এফবিআইয়ের হেফাজতে রয়েছেন এবং গতকাল মঙ্গলবার আদালতে হাজির হলেও কোনো বক্তব্য দেননি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ মে) তাঁর আটকের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে জিয়ানের প্রেমিক লিউ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নেই বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন অফিস।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff